Prose Details
নেংটি নিধনযজ্ঞ
বিভাগ - রম্যরচনা
নেংটি নিধনযজ্ঞ
- সান্তনা সাহা
ভূপেশবাবু বেজায় রাশভারী মানুষ। তার মেজাজের ঠেলায় বাড়ির তিন তিনটে কাজের লোক থেকে শুরু করে তার বউ, ভাই,ভাইয়ের বউ এমনকি তার ভাইপো ভাইঝিরা পর্যন্ত তটস্থ হয়ে থাকে। এহেন ভূপেশবাবু তার পাজামাটি পড়তে গিয়ে দেখেন সেটার দড়ি কাটা। আর আজই কি না তার খুড়তুতো ভাইয়ের ছোট ছেলের পৈতের নিমন্ত্রণ। ব্যস আর যায় কোথায়!
তার তিরীক্ষি চিৎকারে তো সবাই থরহরি কম্পমান! তারপর অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর বোঝা গেল যে সেটি কোন নেংটি ইঁদুরের কাজ। ব্যস ইঁদুর বাবাজীবনের গুষ্টির পিন্ডদানের জন্য ভূপেশবাবু তৎপর হয়ে উঠলেন। প্রথমে এক চাকর হরেনকে বললেন বাজার থেকে ইঁদুর মারার বিষ কিনে আনতে। রাতে বিষ মেশানো খাবার রাখা হল খাটের তলায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ইঁদুর বাবাজী সেটি ছুঁয়েও দেখল না। উল্টে রোজ রাতে ভূপেশবাবুর অকস্মাৎ তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বরাদ্দ আঁখি গুড়ের শরবতের গ্লাসটাকে ফেলে দিয়ে জায়গাটাকে নোংরা করে রাখল। ভূপেশবাবু তো রেগে অগ্নিশর্মা। তলব পড়ল আরেক চাকর গণেশের।তাকে দিয়ে আনানো হল ইঁদুর মারার কল। কিন্তু বিধি বাম। সেই কলে আটকে গেল ভূপেশবাবুর আদরের পোষা কুকুর বিক্রমের একটি থাবা। আর যায় কোথায়! আদরের কুকুরের কষ্টে গণেশের বাপ ঠাকুরদার একপ্রকার মৌখিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হল। গণেশের দ্বারা আর ইঁদুর বধ হল না। ইঁদুরকল সরিয়ে তিন নম্বর চাকর পরাণকে দিয়ে আনানো হল ইঁদুর মারার আঠা যেখানে ইঁদুর বসলে আর নড়তে পারে না। সেখানে বেশ কিছুটা ঝুড়িভাজা ছড়িয়ে ইঁদুর মারায় সঙ্কল্পচিত্ত ভূপেশবাবু সেটাতে হাত দিয়ে দেখতে গেলেন সেটা কতটা শক্তপোক্ত। ব্যস আর যায় কোথায়! আঠার কাগজশুদ্ধু আঙ্গুল নিয়ে সারা বাড়ি দাপিয়ে বেড়াতে লাগলেন। অতিকষ্টে আঙুলের চামড়া প্রায় কেটে সেটিকে মুক্ত করা হল। যন্ত্রণাক্লিষ্ট ভূপেশবাবু রাতের বেলায় শুয়ে আছেন। ঘুমটা মাত্র একটু ধরেছে। এমনসময় ঐ ফিচেল ইঁদুর এসে ভূপেশবাবুর গোঁফ ধরে কামড়াকামড়ি শুরু করল! বেশ কয়েকবার চলল এই উৎপীড়নপর্ব ! ভূপেশবাবু তো চটে কাঁই। থানার বড় দারোগা বলে কথা! তার একটা সম্মান নেই! সকালে উঠে সবার উপর তর্জনগর্জন করে সেই রোষ নিবৃত্তির চেষ্টা করতে লাগলেন। শেষে ভূপেশবাবুর মা মুখ বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্যর স্বরে বলে উঠলেন, এত চোর ডাকাত ধরিস,আর একটা ইঁদুরের সাথে পারিস না! এখন এত দক্ষযজ্ঞ করে কি হবে শুনি? শেষে ভূপেশের বউকে উদ্দেশ্য করে বললেন, বউমা কতদিন ধরে পাড়ার মেনিটা এসে ঘুরে যায়। ভূপেশের কুকুরের দাপটে একদন্ড টিঁকতে পারে না। কাল থেকে ওকে একটু ভালমন্দ খেতে দিয়ে ঘরেতে রেখো। যেমন বলা তেমন কাজ। ব্যস তার পরদিন থেকে আর ইঁদুরের উৎপাতও নেই! ভূপেশ দন্তবিগলিত হাসি হেসে বলে, মা জননী এ বুদ্ধিটি আগে দাওনি কেন? তাহলে কুকুর না পুষে আরও চারখান বিড়ালই পুষতাম!
নেংটি নিধনযজ্ঞ
- সান্তনা সাহা
ভূপেশবাবু বেজায় রাশভারী মানুষ। তার মেজাজের ঠেলায় বাড়ির তিন তিনটে কাজের লোক থেকে শুরু করে তার বউ, ভাই,ভাইয়ের বউ এমনকি তার ভাইপো ভাইঝিরা পর্যন্ত তটস্থ হয়ে থাকে। এহেন ভূপেশবাবু তার পাজামাটি পড়তে গিয়ে দেখেন সেটার দড়ি কাটা। আর আজই কি না তার খুড়তুতো ভাইয়ের ছোট ছেলের পৈতের নিমন্ত্রণ। ব্যস আর যায় কোথায়!
তার তিরীক্ষি চিৎকারে তো সবাই থরহরি কম্পমান! তারপর অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর বোঝা গেল যে সেটি কোন নেংটি ইঁদুরের কাজ। ব্যস ইঁদুর বাবাজীবনের গুষ্টির পিন্ডদানের জন্য ভূপেশবাবু তৎপর হয়ে উঠলেন। প্রথমে এক চাকর হরেনকে বললেন বাজার থেকে ইঁদুর মারার বিষ কিনে আনতে। রাতে বিষ মেশানো খাবার রাখা হল খাটের তলায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ইঁদুর বাবাজী সেটি ছুঁয়েও দেখল না। উল্টে রোজ রাতে ভূপেশবাবুর অকস্মাৎ তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বরাদ্দ আঁখি গুড়ের শরবতের গ্লাসটাকে ফেলে দিয়ে জায়গাটাকে নোংরা করে রাখল। ভূপেশবাবু তো রেগে অগ্নিশর্মা। তলব পড়ল আরেক চাকর গণেশের।তাকে দিয়ে আনানো হল ইঁদুর মারার কল। কিন্তু বিধি বাম। সেই কলে আটকে গেল ভূপেশবাবুর আদরের পোষা কুকুর বিক্রমের একটি থাবা। আর যায় কোথায়! আদরের কুকুরের কষ্টে গণেশের বাপ ঠাকুরদার একপ্রকার মৌখিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হল। গণেশের দ্বারা আর ইঁদুর বধ হল না। ইঁদুরকল সরিয়ে তিন নম্বর চাকর পরাণকে দিয়ে আনানো হল ইঁদুর মারার আঠা যেখানে ইঁদুর বসলে আর নড়তে পারে না। সেখানে বেশ কিছুটা ঝুড়িভাজা ছড়িয়ে ইঁদুর মারায় সঙ্কল্পচিত্ত ভূপেশবাবু সেটাতে হাত দিয়ে দেখতে গেলেন সেটা কতটা শক্তপোক্ত। ব্যস আর যায় কোথায়! আঠার কাগজশুদ্ধু আঙ্গুল নিয়ে সারা বাড়ি দাপিয়ে বেড়াতে লাগলেন। অতিকষ্টে আঙুলের চামড়া প্রায় কেটে সেটিকে মুক্ত করা হল। যন্ত্রণাক্লিষ্ট ভূপেশবাবু রাতের বেলায় শুয়ে আছেন। ঘুমটা মাত্র একটু ধরেছে। এমনসময় ঐ ফিচেল ইঁদুর এসে ভূপেশবাবুর গোঁফ ধরে কামড়াকামড়ি শুরু করল! বেশ কয়েকবার চলল এই উৎপীড়নপর্ব ! ভূপেশবাবু তো চটে কাঁই। থানার বড় দারোগা বলে কথা! তার একটা সম্মান নেই! সকালে উঠে সবার উপর তর্জনগর্জন করে সেই রোষ নিবৃত্তির চেষ্টা করতে লাগলেন। শেষে ভূপেশবাবুর মা মুখ বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্যর স্বরে বলে উঠলেন, এত চোর ডাকাত ধরিস,আর একটা ইঁদুরের সাথে পারিস না! এখন এত দক্ষযজ্ঞ করে কি হবে শুনি? শেষে ভূপেশের বউকে উদ্দেশ্য করে বললেন, বউমা কতদিন ধরে পাড়ার মেনিটা এসে ঘুরে যায়। ভূপেশের কুকুরের দাপটে একদন্ড টিঁকতে পারে না। কাল থেকে ওকে একটু ভালমন্দ খেতে দিয়ে ঘরেতে রেখো। যেমন বলা তেমন কাজ। ব্যস তার পরদিন থেকে আর ইঁদুরের উৎপাতও নেই! ভূপেশ দন্তবিগলিত হাসি হেসে বলে, মা জননী এ বুদ্ধিটি আগে দাওনি কেন? তাহলে কুকুর না পুষে আরও চারখান বিড়ালই পুষতাম!
0 comments
Add your comment here
Use the following form to leave your comment on this prose
Statistics
Number of VISITORS | 28129 |
Number of REGISTERED USERS | 4956 |
Number of Writers | 2121 |
Total Number of Poems | 3 |
Total Number of Prose | 17 |
Search
Writers’ list
" সুদীপ্ত মণ্ডল (SUDIPTA MONDAL) "
স্বরূপ মুখার্জ্জী (Swarup Mukherjee)
Bhaswati Banerjee Roychowdhury
Dr. Pinki Purkayastha Chandrani
Dr. Satyadarshi Roy, A Homoeopathy Consultant
KOUSHIKA CHAKRABORTY MUKHERJEE
Paromita Raha Halder ( Bijoya)
Paromita Raha Halder ( Bijoya)
Prithwish Datta (পৃথ্বীশ দত্ত)
Romi Roy Chowdhury Chakraborty
SHARADINDU CHAKRABORTY শরদিন্দু চক্রবর্তী
Sonali Bhattacharyya Mukherjee
subarnarekha dhar (chatterjee)
Subhasree Bhattacharjee (শুভশ্রী ভট্টাচার্য্য)
SUMANTA BHOWMICK - সুমন্ত ভৌমিক
প্রসেনজীত কর মালাকার (রাতের আঁধার)
শাহীনূর মুস্তাফিজ(বিপ্লবী কবি)