Avatar

বন্দীত্বের ঘরে অসুখ

Maitrayee pal

শিরোনাম : বন্দীত্বের ঘরে অসুখ কলমে : মৈত্রেয়ী পাল জ্বলছে দুচোখ আলোআঁধারিতে অসুখে পুড়ছে মাটি সূর্যডুবির সমাপ্তি রেখায় একাকী আমরা হাঁটি বন্দীত্বের চোরাকুঠুরিতে মানুষ জমানো আছে বেঁচে আছে কী পথিকের দল চেনা পৃথিবীর কাছে ......... বহুদিন দরজার সামনে কোনো চেনা মুখ দেখিনি| হাত ধরাধরি করে নীলেসাদায় পোশাক পরে কচিকাচালিদের রাস্তা পার হতে দেখিনি বহুমাস| আমার মন খারাপের মেঘ বড় অভিমানী| গুমরে মরলেও বৃষ্টি হতে চাই না| বন্দীত্বের ঘরে অসুখ সাজিয়ে রান্নাবাটি খেলার স্মৃতি রোমন্থন করে পাহাড়ের বুকে জমিয়ে রাখে বিষন্নতার অসহ্য যন্ত্রণা | দেখতে দেখতে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় ,শ্রাবন পার হয়ে যায়| শেষ হয়ে যায় একটি বছর | কত ঘেঁটু ফুল অকালেই ঝরে যায়| আগুন রঙের পলাশের বুকে প্রখর রোদ নেমে আসে | জ্বলে যায় কৃষ্ণচূড়া |ছাদের ওপর থেকে মন্দিরের ঘন্টা শুনতে পেয়ে যে বিদ্যার্থী হাতজোড় করে কপালে ঠেকিয়ে হারমোনিয়ামে সুর তুলতে চেয়েছিল দেওয়ালে সাঁটা ক্যালেন্ডারের পাতায় আজ সে বৃষ্টি নামার দিন গোনে | প্রাইমারি স্কুলের ছেলেমেয়েদের সয়াবিনের ঝোল আর গরম ভাত তৃপ্তি করে খেয়ে চামচ দিয়ে থালা বাজাতে বাজাতে হৈহৈ রৈরৈ করে সেই বাড়ি ফেরা দেখে আমিও মুগ্ধ হয়ে আমার শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতাম | কাঁধের পরে কাঁধে হাত রেখে আমরা জনা আটেক কেমন রেলগাড়ি রেলগাড়ি খেলেছি| এখন দিন রাত সমান সমান| গাছেদের দেওয়া ঠান্ডা বাতাস শরীর স্পর্শ করার আগেই বন্ধদরজায় ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে গিয়ে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে অসুস্থ পৃথিবীর দিকে | নাক মুখ ঢেকে দূরত্ব মিছিলে নেমে আমার দুচোখ আরও আরও কালো হয়ে আসে....সকাল সন্ধ্যায় বুকের ওপর চেপে বসে 'ক্ষুধিত পাষাণেরা ', শুনতে পাই রহমত আলীর চিৎকার ... 'তফাৎ যাও ,তফাৎ যাও' | মৃত্যু মিছিল দেখতে দেখতে আমার নিঃশ্বাস শেষ হয়ে আসে | সূর্যাস্তের শেষ রঙ দেখতে না পেয়ে কপাল ঢুকে রক্ত ঝরায় শ্মশানের পথ |বন্দীত্বের ঘরে বাঁধা পড়া অসুখ আরো খানিকটা জাঁকিয়ে বসে গোধূলির ছায়ায় ঘুমন্ত পৃথিবীর প্রতিটি চৌকাঠে চৌকাঠে|

Click Here Clap

No. of Clap : 0

Total Comments:0

Please Login to give comment